নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আবারও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ভয়াবহ ষড়যন্ত্র চলছে। আর এ পরিকল্পনার সর্বোচ্চ পরিকল্পনা এবার বিসিএস প্রশ্নপত্রেই ফাঁস হয়ে গেছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) দেশজুড়ে ৪৯তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার এই বিসিএস প্রশ্নে এমন সব প্রশ্ন করা হয়েছে যেটি দেখে বোঝার উপায় এই এটি বাংলাদেশের প্রশ্ন না পাকিস্তানের।
এরমধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল, সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়ার পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার কোন রাজনৈতিক দলের। আবার আরেকটি প্রশ্ন ছিল ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের বিতর্কিত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার কে ছিলেন? বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদের পাকিস্তান প্রীতি বাড়াতে এ ধরনের প্রশ্ন রাখা হয়েছে।
এদিকে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ, বিদেশি অর্থায়ন এবং ইসলামাবাদের রাজনৈতিক-গোয়েন্দা কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে তীব্র উদ্বেগ। গত আগস্টে মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান ২১ আগস্ট চার দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। আর দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ২৩ আগস্ট।
এর আগে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভি ঢাকায় এসেছিলেন। তখন তিনি জানান, সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান-বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে। এ নিয়ে সমালোচনাও হয় ব্যাপক। বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দুই দেশের বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উদ্যোগী হয় পাকিস্তান।
অনেকেই বলেন, যেখানে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী বিভিন্ন সংগঠন বেশ সক্রিয় তারা কীভাবে আরেক দেশের সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে? এর আগে দুই দেশের বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে গত এপ্রিলে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। এত গেল কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের আক্রমণাত্মক বার্তা
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ক্যাচলাইন–এর এক কলামে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ভারতের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে লেখা হয়েছে, “এখন সময় এসেছে পূর্ব পাকিস্তানকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার।”
লেখক সরাসরি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল আমান আজমিকে আবারও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা উচিত। এমন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে—পাকিস্তানের একাংশ বাংলাদেশকে এখনো একটি হারানো ভূখণ্ড হিসেবে দেখছে।
পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের রহস্যজনক বাংলাদেশ সফর
গত জুনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিন ব্রিগেডিয়ার ঢাকা সফরে আসেন এবং সরাসরি কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে যান, যেখানে ১০ম পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তর অবস্থিত। সাবেক এক বাংলাদেশি মেজর জেনারেল বলেন, “তারা নিঃসন্দেহে গুপ্ত মিশনে ছিলেন, না হলে হঠাৎ রামুর মতো সংবেদনশীল ঘাঁটি সফরের কারণ কী?”
রামু সেনানিবাস বর্তমানে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ ও সরবরাহকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত। ফলে এ সফরকে অনেকেই স্বাভাবিক কূটনৈতিক ভ্রমণের বাইরে এক ধরণের গোপন সামরিক নকশা হিসেবে দেখছেন।
এনসিপি ও জঙ্গি নেটওয়ার্কের অদৃশ্য ভূমিকা
অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, এনসিপি নামের একটি রাজনৈতিক দল গোপনে জঙ্গি সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করছে। তদন্তে উঠে এসেছে—কাতার ও তুরস্কভিত্তিক ইসলামিক ব্যাংকের মাধ্যমে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা এই দলকে অর্থায়ন করছে। গত তিন মাসে শুধু আঙ্কারা হয়ে করাচিতে ১২.৭ মিলিয়ন ডলার ঢুকেছে এনসিপির শেল অ্যাকাউন্টে।
অভ্যন্তরীণ গোপন নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনীতে কৌশলগত বদলি হয়েছে, যেখানে জঙ্গি সহানুভূতিশীল কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। এখনকার ভূরাজনীতিতে চীন-ভারত প্রতিদ্বন্দ্বিতা বড় ভূমিকা রাখছে। ইসলামাবাদ-দোহা-ইস্তাম্বুল অক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে কিছু পশ্চিমা শক্তি, যাদের আগের অবস্থান ছিল সম্পূর্ণ জঙ্গিবাদবিরোধী।