নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংবিধানিক ভারসাম্যের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে অবৈধ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত চীফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট ও তাদের চেইন অব কমান্ড দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
যদি এই অভিযোগ সত্য হয়, তবে এটি কেবল একটি প্রশাসনিক অনিয়ম নয়—এটি জাতীয় নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সার্বভৌমত্বের ভিত্তির ওপর সরাসরি আঘাত।
অভিযোগের সূত্রগুলো বলছে, তাজুল ইসলাম ও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সেনাবাহিনীকে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমালোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসতে সচেষ্ট। বিভিন্ন মাধ্যমে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। এর মাধ্যমে দেশের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে দাবি উঠেছে।
আরও বিস্ময়কর অভিযোগ হলো ইউনুস সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে সামরিক বাহিনীকে জটিল অবস্থানে ফেলছে। একই সঙ্গে মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর উত্থানকে নীরবে প্রশ্রয় দিয়ে সামরিক ও বেসামরিক সম্পর্কের মধ্যে অবিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনী একটি রাষ্ট্রের শেষ ভরসাস্থল,দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি এই প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আক্রমণ বা বিভক্ত করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে তা দেশের অখণ্ডতা ও সংবিধানিক কাঠামোর জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যেসব দেশে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার করা হয়েছে, সেসব দেশ অচিরেই বিশৃঙ্খলা ও অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত হয়েছে। তাই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য বা পদক্ষেপকে হালকাভাবে নেওয়া চলবে না।
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারের পথ খোলা থাকা উচিত। যদি তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো সত্য হয়, তবে দ্রুত একটি স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে, সরকার ও প্রসিকিউটর অফিসের পক্ষ থেকেও পরিষ্কার ব্যাখ্যা আসা উচিত যাতে বিভ্রান্তি দূর হয় এবং জনগণের আস্থা বজায় থাকে।
অন্যদিকে, সেনাবাহিনী যদি মনে করে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, তাহলে তাদেরও উচিত আইনি ও প্রশাসনিক উপায়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। রাষ্ট্রের মূল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস বজায় রাখাই এখন সময়ের দাবি।
বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীকে টার্গেট করে কোনো রাজনৈতিক চাল বা প্রশাসনিক প্রভাব বিস্তার করার প্রচেষ্টা জাতির ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। যে কেউ যদি সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকে, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে আর যদি এসব অভিযোগ মিথ্যা হয়, তবে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
দেশের সংবিধান, আইন ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা অটুট রাখা,এই মুহূর্তে সেটিই সবচেয়ে বড় জাতীয় দায়িত্ব।