Wednesday, October 22, 2025

লালন উৎসবের আমন্ত্রণপত্রে ভুল : এসএসসি ফেল উপদেষ্টা ফারুকীর যোগ্যতার নমুনা!

Share

লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবসের আমন্ত্রণপত্রে ইংরেজির যে বিশ্রী ভুলগুলো দেখা গেছে, সেগুলো নিয়ে হাসনাত আবদুল হাই যা বলেছেন তা একদম সঠিক। কিন্তু আসল কথাটা তো তিনি বলেননি – কিংবা বলতে পারেননি। আসল কথা হলো, এসব ভুলের পেছনে যে মানুষটা দায়ী, সেই মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নিজেই এসএসসি পাস করতে পারেননি। মানে দশম শ্রেণির ছাত্র হিসেবে ফেল।

এখন ভাবুন তো, যে মানুষ নিজে স্কুল শেষ করতে পারেনি, কলেজ-ভার্সিটি তো অনেক দূরের কথা, সেই মানুষই হাজার বছরের বাংলার সংস্কৃতির দায়িত্ব পেয়ে বসে আছেন। মাদ্রাসায় পড়েছেন বলে শুনেছি। কিন্তু স্কুল সার্টিফিকেট পর্যন্ত জোটেনি। আর এই লোকটাকেই ইউনুস সাহেব বানিয়ে দিয়েছেন পুরো দেশের সাংস্কৃতিক বিষয়ের কর্তা।

কী আশা করছেন আপনারা এই লোকের কাছ থেকে? ইংরেজিতে একটা ঠিকঠাক আমন্ত্রণপত্র ছাপানো? সেটা হবে কীভাবে? উনি নিজে তো ইংরেজি বোঝেন কিনা সন্দেহ, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাই তো শেষ হয়নি। আর যারা উনার অধীনে কাজ করছেন, তারাও বোঝেন এই উপদেষ্টা সাহেব আসলে কতটুকু যোগ্য। তাই হয়তো কেউ মাথা ঘামায়নি ঠিকমতো ইংরেজিটা লিখতে।

হাসনাত আবদুল হাই বলেছেন, বিদেশিরা এই আমন্ত্রণপত্র পড়লে কী মনে করবে। আসলে বিদেশিরা কী মনে করবে সেটাই বা কেন ভাববেন ফারুকী সাহেব? উনি তো নিজেই জানেন না ইংরেজি আমন্ত্রণপত্রে কী লেখা হয়। “chalked out” টাইপের পুরনো দাপ্তরিক শব্দ দিয়ে একটা জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের কার্ড ছাপানো হচ্ছে। “Death Anniversary” লেখা হচ্ছে বড় হাতের অক্ষরে, যেন কোনো পদবি। “is going to commemorate nationally” – এই ধরনের বিকৃত বাক্যগঠন দেখলে মনে হয় কোনো অষ্টম শ্রেণির ছাত্র লিখেছে।

আর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা? কেউ মন্তব্য করতে রাজি নন। কারণ তারা জানেন, তাদের বসের যোগ্যতা কী। একজন এসএসসি ফেল মানুষকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বানানো হয়েছে, এটা নিয়ে কী বলবেন তারা? চাকরি যাবে না তো? তাই সবাই চুপ। ফোন ধরছেন না ফারুকী সাহেবও। ধরবেন কী করে? উত্তর কী দেবেন?

এই যে শিল্পকলা একাডেমিকে বাদ দিয়ে সরাসরি মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠান করছে, এটাও তো আসলে যোগ্যতার অভাবের লক্ষণ। হাসনাত আবদুল হাই নিজে সচিব ছিলেন, তিনি জানেন কীভাবে এই ধরনের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু যে মানুষ প্রশাসনিক কাঠামো বোঝেন না, স্কুলের গণ্ডিই যার পেরোনো হয়নি, তিনি কী করে বুঝবেন মন্ত্রণালয় আর একাডেমির ভূমিকা কী হওয়া উচিত?

লালন ফকির কে ছিলেন? বাংলার লোকসংস্কৃতির এক মহান সাধক। তার দর্শন, তার গান – সব কিছুই এই বাংলার মাটির সাথে মিশে আছে। সেই লালনের স্মরণসভার আমন্ত্রণপত্রে এই হাস্যকর ভুল। আর এই ভুলের দায় কার? যে মানুষটা মাদ্রাসায় পড়েছেন, স্কুল সার্টিফিকেট পাননি, তাকে বানানো হয়েছে বাংলার সংস্কৃতির রক্ষক।

এই হলো আমাদের অবস্থা। জুলাই মাসে যা হলো তার পর ইউনুস সাহেব আর তার দল যে ধরনের মানুষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন, ফারুকী সাহেব তার একটা নমুনা মাত্র। যোগ্যতা দিয়ে নয়, অন্য কোনো বিবেচনায় এসব নিয়োগ হয়েছে। আর তার ফল? একটা আমন্ত্রণপত্রও ঠিকমতো ছাপাতে পারছেন না।

এখন বলুন, এসএসসি ফেল একজন মানুষ কীভাবে বাংলাদেশের সংস্কৃতির নেতৃত্ব দেবেন? কীভাবে তিনি বুঝবেন রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-লালনের ঐতিহ্য? কীভাবে সংরক্ষণ করবেন আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাস? উত্তর সহজ – পারবেন না। আর পারছেনও না। এই আমন্ত্রণপত্রই তার প্রমাণ।

Read more

Local News